অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, আমরা এমন এক বিশ্বে বাস করি, যেখানে প্রতিনিয়ত যুদ্ধের হুমকি আসছে। এ অবস্থায় যুদ্ধের প্রস্তুতি না রাখাটা আত্মঘাতী। তাই প্রস্তুতি থাকতে হবে। আমাদের নিকটবর্তী ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ শুরু হয়ে যাওয়ার মতো অবস্থার মধ্যে রয়েছে। বুধবার ঢাকায় বিমানবাহিনীর বার্ষিক মহড়া অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় যুগোপযোগী বিমানবাহিনী গড়ে তুলতে সরকারের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে বলেও জানান প্রধান উপদেষ্টা। বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খান এ সময়ে মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন-অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, সেনা ও নৌবাহিনী প্রধান, সরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা এবং সামরিক বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। এর আগে প্রধান উপদেষ্টা তার কার্যালয়ে বন্যাকবলিত দুস্থদের ঘর প্রদান করেন।
বিমানবাহিনীর অনুষ্ঠানে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, আমি যুদ্ধবিরোধী মানুষ। পৃথিবীতে যুদ্ধ হোক এটা আমরা কামনা করি না। যুদ্ধ প্রস্তুতি অনেক সময় যুদ্ধের দিকে নিয়ে যায়। কাজেই যুদ্ধ প্রস্তুতি নিয়েও একটা ঘোরতর আপত্তি। কিন্তু এমন বিশ্বে আমরা বাস করি, প্রতিনিয়ত যুদ্ধের হুমকি আমাদের ঘিরে থাকে। তো সেখানে প্রস্তুতি না নিয়ে থাকা এটা অসম্ভব হয়ে পড়ে। কাজেই এই পরিস্থিতির মধ্যে যুদ্ধের প্রস্তুতি না নেওয়াটা আত্মঘাতী। প্রস্তুতি নিতে হলে আধাআধি প্রস্তুতির কোনো জায়গা নেই। কারণ যুদ্ধে জয়ই শেষ কথা। উদাহরণ হিসাবে তিনি বলেন, আমাদেরই কাছে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ শুরু হয়ে যাওয়ার মতো অবস্থার মধ্যে রয়েছে। সকালের খবরে দেখলাম, হয়তো গুজব, আজকেই শুরু হয়ে যাবে যুদ্ধ। এটা এমন এক পরিস্থিতি, জয়ই একমাত্র অপশন। অন্য কোনো অপশন হতে পারে না। কাজেই আমাদের প্রস্তুতি কত উচ্চ পর্যায়ে নিতে পারি, সে চেষ্টাই থাকতে হবে। যুদ্ধ একটি ব্যয়বহুল ব্যাপার উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমাদের অর্থনীতি দুর্বল অবস্থায় আছে। বিগত সরকারের কারণে লুট হয়ে গেছে অর্থনীতি। এ পরিস্থিতিতে সামগ্রিকভাবে প্রস্তুত থাকতে হবে। এতে আমাদের সাহস বাড়ে। আমাদের ছেলেমেয়েরাও সাহস পাবে।
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলছে বিমানবাহিনী। সার্বভৌমত্ব রক্ষায় তৎপর থাকতে হবে। দেশীয় প্রযুক্তি ব্যবহার করে আত্মনির্ভরতার প্রমাণ দিয়েছে বিমানবাহিনী। অত্যাধুনিক প্রযুক্তির জন্য সরকার সহযোগিতা করছে বাহিনীটিকে। পেশাগত কারিগরি সক্ষমতা বজায় রাখতে হবে। দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় যুগোপযোগী বিমানবাহিনী গড়ে তুলতে সরকারের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, দেশপ্রেম ও পেশাদারিত্ব আগামী দিনের নিরাপদ বাংলাদেশ গড়ার মূল ভিত্তি। সবার ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় একটা নিরাপদ, উন্নত ও শক্তিশালী বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে। এ সময় তিনি যুগোপযোগী ক্ষমতা ও দক্ষতা অর্জন এবং পেশাগত ও কারিগরি সক্ষমতা বাড়াতে বিমানবাহিনীর সদস্যের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ভবিষ্যতে বিমানবাহিনীতে অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান, হেলিকপ্টার পরিবহণ বিমান, রাডার সংযোজনের জন্য সরকার সর্বাত্মক সহযোগিতা দেবে।
এদিকে বিমানবাহিনীর বার্ষিক মহড়া ‘আকাশ বিজয়’ বুধবার অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২৩ এপ্রিল এটি শুরু হয়। আর মহড়ার কিছু গুরুত্বপূর্ণ অংশের সমন্বয়ে একটি চূড়ান্ত সমন্বিত মহড়া গতকাল কুর্মিটোলায় বিমানবাহিনী ঘাঁটি বীর-উত্তম একে খন্দকারে অনুষ্ঠিত হয়। প্রধান অতিথি হিসাবে ড. ইউনূস মহড়াটি পর্যবেক্ষণ করেন। এদিন তিনি বিমানবাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ মতবিনিময় সভায় অংশ নেন। বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খান এ সময় প্রধান উপদেষ্টাকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন ও ক্রেস্ট হস্তান্তর করেন। অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ‘আকাশ বিজয়’ মহড়াটি বিমানবাহিনীর সামরিক প্রস্তুতি, কৌশলগত দক্ষতা ও আন্তঃবাহিনী সমন্বয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ বহিঃপ্রকাশ। বিমানবাহিনীর সব ঘাঁটি ও ইউনিটের বিভিন্ন ধরনের যুদ্ধবিমান, পরিবহণ বিমান, হেলিকপ্টার, আনম্যান্ড এরিয়াল ভেহিক্যাল, র্যাডার এবং অন্যান্য আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাসহ সংশ্লিষ্ট সব ইউনিট এতে অংশ নেয়। এই আয়োজনকে সময়োপযোগী এবং আরও ফলপ্রসূ করতে বিমানবাহিনীর সম্পদ দুই ভাগ করে অনুশীলন পরিচালনা করা হয়। এর মাধ্যমে বিমানবাহিনীর কর্মদক্ষতা, যুদ্ধ প্রস্তুতি, অপারেশনাল সক্ষমতা এবং বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে চিহ্নিত করা হবে। বিমানবাহিনীর পাশাপাশি সেনা ও নৌবাহিনী, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি), পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস এবং সিভিল ডিফেন্স ও বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোরের (বিএনসিসি) প্রতিনিধিরা অংশ নেয়। এটি আন্তঃবাহিনী সমন্বয়ের একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বিমানবাহিনী সদাপ্রস্তুত, দৃঢ় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ও নিবেদিত, এই মহড়া তারই বার্তা।
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের আবাসন : অন্যদিকে গত বছরের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য বিশেষ আবাসন প্রকল্পে নির্মিত ঘর বিতরণ করেছেন ড. ইউনূস। বুধবার সকালে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব ঘর বিতরণ করেন। গত বছরের ওই বন্যায় অনেক মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়ে। প্রাথমিকভাবে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত জেলা ফেনী, নোয়াখালী, কুমিল্লা ও চট্টগ্রাম। অসংখ্য বাড়িঘর সম্পূর্ণ ও আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে অনেক মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়ে। এর মধ্যে যেসব পরিবারের বাড়ি সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কিন্তু ঘর নির্মাণের সামর্থ্য নেই-এ রকম তিনশটি পরিবারকে ঘর দেওয়া হয়। এর মধ্যে রয়েছে-ফেনীতে ১১০টি, নোয়াখালী ৯০, কুমিল্লা ৭০ এবং চট্টগ্রাম জেলায় ৩০টি ঘর।
𝐄𝐱𝐞𝐜𝐮𝐭𝐢𝐯𝐞 𝐄𝐝𝐢𝐭𝐨𝐫 : 𝐃𝐞𝐰𝐚𝐧 𝐈𝐬𝐡𝐭𝐢𝐚𝐪 𝐌𝐚𝐡𝐦𝐮𝐝, 𝐍𝐞𝐰𝐬 𝐄𝐝𝐢𝐭𝐨𝐫: 𝐊 𝐌 𝐒𝐡𝐨𝐰𝐤𝐚𝐭 𝐇𝐚𝐲𝐚𝐭, 𝐄𝐝𝐢𝐭𝐨𝐫 & 𝐏𝐮𝐛𝐥𝐢𝐬𝐡𝐞𝐫 : 𝐌𝐝. 𝐙𝐚𝐤𝐢𝐫 𝐇𝐨𝐬𝐬𝐚𝐢𝐧 𝐎𝐟𝐟𝐢𝐜𝐞 : 𝐒𝐚𝐝𝐡𝐚𝐫𝐚𝐧 𝐁𝐢𝐦𝐚 𝐒𝐚𝐝𝐚𝐧 (𝟒𝐭𝐡 𝐟𝐥𝐨𝐨𝐫) 𝟐𝟒-𝟐𝟓, 𝐃𝐢𝐥𝐤𝐮𝐬𝐡𝐚𝐤 𝐂/𝐀, 𝐃𝐡𝐚𝐤𝐚-𝟏𝟎𝟎𝟎
𝐂𝐞𝐥𝐥 : 𝟎𝟏𝟕𝟑𝟏 𝟓𝟕𝟒𝟓 𝟎𝟗, 𝟎𝟏𝟔𝟐𝟑 𝟖𝟖𝟖 𝟖𝟔𝟐 𝐌𝐚𝐢𝐥 :𝐢𝐧𝐟𝐨𝐛𝐚𝐧𝐠𝐥𝐚𝐤𝐡𝐨𝐛𝐨𝐫@𝐠𝐦𝐚𝐢𝐥.𝐜𝐨𝐦,
𝐖𝐞𝐛 : 𝐰𝐰𝐰.𝐝𝐚𝐢𝐧𝐚𝐤𝐛𝐚𝐧𝐠𝐥𝐚𝐤𝐡𝐨𝐛𝐨𝐫.𝐜𝐨𝐦
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত