জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের “জুলাই পুনর্জাগরণ”-এ অশ্রুসিক্ত শ্রদ্ধা
২৬ জুলাই ২০২৫, শনিবার—দিনের ক্যালেন্ডারে আর দশটা দিনের মতো হলেও, ইতিহাসের পাতায় এটি এক ব্যথাতুর স্মৃতি, এক বুক চাপা কান্নার নাম—“জুলাই বিপ্লব”।
আজ সেই দিনেই জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগে অনুষ্ঠিত হলো ‘জুলাই পুনর্জাগরণ’ শীর্ষক আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল। অনুষ্ঠানে শহীদ পরিবারগুলোর হাতে তুলে দেওয়া হয় আর্থিক সহায়তার চেক—তাদের মুখে ছিল না কোনো অভিযোগ, কিন্তু চোখে ছিল চাপা বিষাদ। হারানো স্বজনদের স্মৃতিতে অনেকেই কান্না চাপতে পারেননি।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, সচিব, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ, বক্তব্য রাখতে গিয়ে কয়েকবার থেমে যান। তিনি আবেগভরে বলেন:
“আমরা যাদের কথা আজ স্মরণ করছি, তাঁরা আর ফিরবেন না। তাঁদের শূন্যতা পূরণ হবার নয়। কিন্তু আমরা তাঁদের স্বপ্ন পূরণ করতে পারি। এটা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।”
তিনি শহীদদের আত্মত্যাগকে জাতির শ্রেষ্ঠ অর্জন বলে অভিহিত করেন। তাঁর কণ্ঠে ছিল বেদনার ভার, ছিল দায়বদ্ধতার অঙ্গীকার।
এক শহীদ স্ত্রীর করুণ কণ্ঠে উচ্চারিত হয়,
“স্বামী হারালাম ঠিকই, তবু গর্ব করি—সে দেশের জন্য শহীদ হয়েছে। কিন্তু প্রতিটি রাতে সন্তানকে বাবার গল্প শুনিয়ে ঘুম পাড়াতে হয়…”
অপরদিকে, এক আহত যোদ্ধা জানালেন—শরীরের ক্ষত শুকিয়েছে, কিন্তু মনের ক্ষত রয়ে গেছে। তিনি বললেন:
“আমরা July-তে বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়েছিলাম, কিন্তু অনেকেই July-এর কান্না ভুলে গেছেন…”
অনুষ্ঠানের শেষাংশে অনুষ্ঠিত দোয়া মাহফিলে উপস্থিত সকলের চোখ ছলছল করছিল। শহীদদের আত্মার মাগফিরাত, আহতদের সুস্থতা এবং দেশের শান্তি কামনায় মোনাজাত করা হয়।
আকাশ যেন সেদিন কিছুটা ধূসর ছিল। হয়তো শহীদদের আত্মাও জানছিল, কেউ একজন আজ তাঁদের কথা ভাবছে।
“জুলাই পুনর্জাগরণ” ছিল কেবল একটি আনুষ্ঠানিকতা নয়; এটি ছিল ইতিহাসের কাছে ক্ষমা প্রার্থনার দিন। ছিল চেতনার অঙ্গীকার, ছিল বেদনার প্রকাশ।
এই আয়োজনে আবারও প্রমাণ হলো—জুলাই শহীদরা হারিয়ে যাননি, তাঁরা জাতির স্মৃতিতে অমর হয়ে আছেন।
প্রতিবেদন প্রণয়ন:
মোহাম্মদ জাকির হোসেন
সাংবাদিক ও কলাম লেখক
সম্পাদক, বাংলা খবর ডটকম